বন উজাড় করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কিভাবে সম্ভব

বন উজাড় করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কিভাবে সম্ভব

বন উজাড় করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কিভাবে সম্ভব, আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। আন্তর্জাতিকভাবে,

এই বছরের থিম হল ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধারের জন্য মূল প্রজাতি পুনরুদ্ধার করা। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে

এই দিবসটির মূলমন্ত্র জনসচেতনতা সৃষ্টিতে যতটা প্রাসঙ্গিক, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা বিভ্রান্তিকর।

বিপন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষা করলে অন্তত বাংলাদেশে পরিবেশ পুনরুদ্ধার হবে না। বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

তার মধ্যে একটি হল পরিবেশের অবক্ষয় ও দূষণ, বন, নদী ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য অদূরদর্শী

পরিকল্পনা।জাতিসংঘ ২০২১-৩০ কে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১-এ পরিবেশ রক্ষার দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে।

সব সময় বিশ্বের দেশগুলোকে টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। তবে, পরিবেশ পুনরুদ্ধারে

বাংলাদেশ কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য আদৌ অর্জিত হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সরকার বিভিন্নভাবে বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্ব দিয়েছে।

আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:newstipo.com

বন উজাড় করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কিভাবে সম্ভব

এমনকি সংবিধানের ১৬(এ) অনুচ্ছেদ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশের প্রতিশ্রুতি দেয়। “রাষ্ট্র বর্তমান এবং ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন করবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সুরক্ষা প্রদান করবে,” এতে বলা হয়েছে।তবে সংশ্লিষ্ট মহলের যোগাযোগ ও সমন্বয়হীনতার কারণে বনের স্বার্থ নানাভাবে উপেক্ষিত হয়েছে এবং হচ্ছে। আলোচনায় প্রায়ই বন্যপ্রাণীর স্বার্থ উপেক্ষা করা হয়। বন্যপ্রাণীর মৃত্যু বা এ সংক্রান্ত দুর্ঘটনা ঘটলে সোচ্চার হয় গণমাধ্যম সংস্থাগুলো।এ প্রসঙ্গে হাজারিখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও বারিয়ারধলা জাতীয় উদ্যান হয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। বন বিভাগের তীব্র আপত্তি এবং গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার কারণে বাস্তবায়ন পর্ব স্থগিত করা হয়। বন পরিবেশের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পরিকল্পনা পর্যায়ে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্র বিভাগের মধ্যে বিস্তৃত ধারণাগত পার্থক্য রয়েছে।

বলাই বাহুল্য আন্তঃখাত সমন্বয়ের অভাব তীব্র

তাই বারইয়ারধলা জাতীয় উদ্যানসহ অন্যান্য বনাঞ্চলে রাস্তার কাজ, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপন বন্ধ করতে বন বিভাগকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বন বিভাগের সীমিত জনবল দিয়ে স্বল্প পরিমাণ জমি উদ্ধার করা হলেও জনবলের অভাব ও মামলা-মোকদ্দমা জটিলতায় বনভূমি দীর্ঘমেয়াদে অবনমিত হয়ে পড়ে।তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শুধু বিপন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষা করেই পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কোনো সুযোগ নেই। এ উপলক্ষে অসংখ্য বন উচ্ছেদ করা হয়। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৩ একর সংরক্ষিত বন জবরদখল করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে মাত্র ১২ হাজার ২১৪ একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এই গণিত পাঠক সহজেই অনুমান করতে পারেন কখন এই বনভূমি উদ্ধার করা হবে এবং কখন এতে বনের পরিবেশ পুনরুদ্ধার করা হবে।বন্যপ্রাণী বা পরিবেশ রক্ষায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, এসব কাজে মানুষকে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই, বন আইনকে জনবান্ধব করতে হবে, জনগণের অংশগ্রহণকে সহায়ক করতে হবে।

তা না হলে মানুষ পরিবেশ নষ্ট করবে

এলাকার বনবিড়াল ও বাগদাশ ধরে বন বিভাগকে খবর দেবে।তাছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে বন ও বনজ সম্পদ ঘিরে সমন্বয়হীনতার এমন অসংখ্য নজির আমরা দেখেছি। এ ধরনের সমন্বয়হীনতার কারণে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে হাতির আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে তাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।উল্লেখ্য, বিভিন্ন কারণে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৪৪টি হাতি মারা গেছে। সাংবিধানিকভাবে বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব বাস্তবে প্রতিফলিত হয় না। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে তা শুধু বন ও জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণকেই ব্যাহত করবে না, বড় আকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও কঠিন করে তুলবে, এটা নিশ্চিত।ব্রিটিশ উত্তরাধিকার হিসাবে বাংলাদেশে বন ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং ব্যবস্থাপনা কৌশল যতটা পরিবর্তন করা দরকার ছিল ততটা হয়নি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *