ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো কি ঝুঁকিতে রয়েছে

ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো কি ঝুঁকিতে রয়েছে, রাশিয়া গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রথাগত

পদ্ধতিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে সব ধরনের আলোচনা ও সমঝোতার পথ অবরুদ্ধ করে।

এ পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে রাশিয়ার সামরিক হামলায় শত শত ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা ৫০০ টিরও বেশি রুশ সেনাকে হত্যা করেছে।রাশিয়া ইতিমধ্যেই

ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক শহর দখল করেছে। সামরিক ঘাঁটি, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং চেরনোবিল পারমাণবিক

বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ সমস্ত সংবেদনশীল স্থাপনায় আক্রমণ করা। যেদিন আমার প্রবন্ধ প্রকাশিত হবে,

সেদিন অগণিত মানুষ মারা যাবে, লক্ষ লক্ষ লোক তাদের জমি হারাবে, এবং ধ্বংস বাড়তে থাকবে।

রাশিয়ার এখন মূল লক্ষ্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ দখল করা।দুই দশকের

মধ্যে এটি রাশিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক সামরিক হামলা বলে জানা গেছে। এই হামলার ফলে ন্যাটো

সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হয়।

আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:newstipo.com

ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো কি ঝুঁকিতে রয়েছে

এই যুদ্ধ কোথায় শেষ হবে বলা মুশকিল। ন্যাটোর পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি—এ পর্যন্ত সামরিক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকলেও রাশিয়া কঠিন অর্থনৈতিক অবরোধের মুখোমুখি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিভাবে এই অর্থনৈতিক অবরোধ মোকাবেলা করবেন সেটাই দেখার বিষয়।ইউক্রেনে হামলার ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী। তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ থেকে ১০৫ ডলারের মধ্যে নেমে এসেছে। খাবারের দাম ইতিমধ্যেই বাড়ছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা। যদিও আমার মনে অনেক উদ্বেগ রয়েছে, তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা।প্রথমত, ইউক্রেনের ৫১ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে ১৫ টি চলমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ১৯৬০-এর দশকে রাশিয়ান জেনারেশন-২ এবং বর্তমান প্রজন্ম-৩ প্লাস চুল্লিগুলির নকশা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার মতো শক্তিশালী নয়। বিদ্যুৎ ছাড়া তাদের নিরাপত্তা আধা ঘণ্টার বেশি চলতে পারে না।

অন্যদিকে এই পারমাণবিক চুল্লি ক্ষেপণাস্ত্র

বা বোমারু হামলা প্রতিরোধে অক্ষম। সাইবার আক্রমণ একটি পাওয়ার প্ল্যান্টের পাওয়ার সিস্টেম এবং ডেটা সিস্টেমও ধ্বংস করতে পারে। এটি চেরনোবিলের মতো আরও বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে যদি পাওয়ার ট্রান্সমিশন লাইন ভেঙে যায় বা বিদ্যুৎ-নির্ভর জরুরি কুলিং সিস্টেম সময়মতো চালু না হয়।ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারকরা ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইউক্রেন এবং জাপান এখনও চেরনোবিল বা ফুকুশিমা দুর্ঘটনার ক্ষতি বহন করে। আমরা আর যুদ্ধ দেখতে চাই না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য দায়িত্বশীল নীতিনির্ধারকরা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করবেন—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।দ্বিতীয়ত, এ পর্যন্ত যে তিনটি বড় পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছে (থ্রি মাইল, চেরনোবিল এবং ফুকুশিমা) তা শ্রমিকদের অদক্ষতা বা অবহেলার কারণে। এখন শ্রমিকরা যদি মানসিক বা স্নায়বিক চাপের কারণে পরিবার ও দেশের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদাসীন বা উদাসীন হন, তাহলে পারমাণবিক দুর্ঘটনার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

তৃতীয়ত আরেকটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় হল

পারমাণবিক নিরাপত্তা ঝুঁকি। যুদ্ধ বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে, পারমাণবিক স্থাপনায় পারমাণবিক নিরাপত্তা অত্যন্ত নাজুক। এই কারণে, জাতীয় বা আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা একটি নোংরা বোমা, এমনকি একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টায় তেজস্ক্রিয় উপাদান আত্মসাৎ করার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। কি ভয়ানক ব্যাপার! তাহলে আমরা কেউ নিরাপদ থাকব না।ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম দিনে, আমরা রাশিয়াকে বেলারুশিয়ান সীমান্তে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে এবং শ্রমিকদের জিম্মি করতে দেখেছি। চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখনও চারটি চুল্লিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধীনে রয়েছে এবং ইউক্রেন দেশের ১৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন উচ্চ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট স্থাপন করেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কখনোই সামরিক হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।

Leave a Comment